প্রচ্ছদ পণ্যের বার্তা অস্থিতিশীল গমের আন্তর্জাতিক বাজার রেকর্ড রপ্তানির পথে অস্ট্রেলিয়া

অস্থিতিশীল গমের আন্তর্জাতিক বাজার রেকর্ড রপ্তানির পথে অস্ট্রেলিয়া

0

বিশ্বজুড়ে গমের চাহিদা লাফিয়ে বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় নেই সরবরাহ। এ কারণে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে কৃষিপণ্যটির বাজার। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য টানা দ্বিতীয়বারের মতো বেড়ে তিন সপ্তাহের সর্বোচ্চে উঠে এসেছে। এদিকে অন্যতম গম উৎপাদনকারী দেশ অষ্ট্রেলিয়া রপ্তানিতেও রেকর্ড করতে যাচ্ছে। বিজনেস রেকর্ডার।

সিবিওটিতে সর্বাধিক সক্রিয় গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি বুশেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭ ডলার ৬১ সেন্টে। ৪ অক্টোবরের পর এটিই সর্বাধিক দাম। কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার এগ্রিকালচারাল স্ট্র্যাটেজি বিভাগের পরিচালক টোবিন গোরেই বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গম আবাদি অঞ্চলগুলোতে শুষ্ক আবহাওয়া মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি সারের উচ্চমূল্যও বাজারকে প্রভাবিত করছে।

চলতি মৌসুমে প্রধান রপ্তানি অঞ্চলগুলোতে গমের মজুদ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শক্তিশালী রপ্তানি চাহিদা থাকায় বাজারে অস্থিতিশীলতা বাড়ছে। এ বছর অস্ট্রেলিয়ায় টানা দ্বিতীয়বারের মতো গম উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে বাড়ছে রপ্তানি চাহিদা। আমদানিকারকরা অনেক ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন। চাহিদা মেটাতে ক্রেতা দেশগুলো অতিমাত্রায় গম কেনায় কমছে রপ্তানিকারক দেশগুলোর মজুদ। ব্যাহত হচ্ছে সরবরাহ। এদিকে গমের পাশাপাশি বেড়েছে সয়াবিনের দামও। তিন কার্যদিবসে প্রথমবারের মতো তেলবীজটির দাম বাড়ে। এছাড়া ঊর্ধ্বমুখিতায় শেষ হয়েছে ভুট্টার বাজার। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) সয়াবিনের দাম দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ে। প্রতি বুশেল লেনদেন হয়েছে ১২ ডলার ৩০ সেন্টে। দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি টন ভুট্টা লেনদেন হয়েছে ৫ ডলার ৩৮ সেন্টে।

এদিকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়ায় গমের ফলন ভালো হয়েছে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বড় একটি অংশ উদ্বৃত্ত থাকবে। ফলে বিশ্ববাজারে রেকর্ড পরিমাণ গম রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ওশেনিয়া মহাদেশের দেশটি। বিশ্বব্যাপী গমের শক্তিশালী চাহিদা থাকায় ২০১১-১২ মৌসুমের রপ্তানি রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ইউএসডিএ জানায়, ২০২০-২১ বিপণন মৌসুমের ১১ মাসে অস্ট্রেলিয়া ২ কোটি ২৬ লাখ টন গম রপ্তানি করে। রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে মোট রপ্তানি দাঁড়াবে ২ কোটি ৪০ হাজার টন। এটি ২০১১-১২ মৌসুমের রেকর্ড রপ্তানির চেয়ে সাত লাখ টন কম।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, রপ্তানি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে। ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি ৫৮৩ এবং ভিয়েতনামে ৩৭৪ শতাংশ বাড়ে। ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ইয়েমেন ও মালয়েশিয়ায়।

অনেক দেশ রয়েছে যেগুলোতে গত পাঁচ বছরে গম রপ্তানির হার ছিল অত্যন্ত কম। কিন্তু ২০২০-২১ মৌসুমে এসব দেশই অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী রপ্তানি বাজারে পরিণত হয়। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, সৌদি আরব, শ্রীলংকা ও ইতালি। দুই বছরের বিধ্বংসী খরার পর টানা দ্বিতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়ায় গমের ফলন ভালো হয়েছে। রেকর্ড রপ্তানিতে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা রাখছে ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন।

এদিকে ইউএসডিএর পূর্বাভাস বলছে, ২০২১-২২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদন ৩ কোটি ১৫ লাখ টনে পৌঁছবে। এটি গত বছরের রেকর্ড উৎপাদনের তুলনায় ১৮ লাখ টন কম, তবে তৃতীয় সর্বোচ্চ উৎপাদন। এছাড়া ১০ বছরের গড় উৎপাদনের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।

NO COMMENTS

আপনার মতামত প্রদান করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version