প্রচ্ছদ অর্থনী‌তির বার্তা আগামী মাসেই বাজারে আসছে দেশে তৈরি শাওমি স্মার্টফোন

আগামী মাসেই বাজারে আসছে দেশে তৈরি শাওমি স্মার্টফোন

0

অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার দেশেই স্মার্টফোন তৈরি শুরু করলো চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি। দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল, কোম্পানিটি বাংলাদেশে উৎপাদন শুরু করবে। তবে কবে থেকে শুরু করবে সেটি জানা যাচ্ছিল না। তবে এবার সেটি সত্যি হলো।

দেশে স্মার্টফোন তৈরি হলে শাওমির ফোনের দাম কমবে। আর এই ফোনটির দাম কমলে প্রতিযোগী আরও ফোনের দাম কমবে বলে আসা প্রযুক্তিপ্রেমীদের। গত সোমবার গাজীপুরের ভোগড়ায় শাওমির স্মার্টফোন কারখানা উদ্বোধন হয়েছে। শাওমির এ ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্মার্টফোন আগামী মাসে বাজারে আসবে বলে জানালেন ব্র্যান্ডটির কর্তাব্যক্তিরা।

চীনা এই ব্র্যান্ডের জন্য স্মার্টফোন সংযোজন করবে তাদেরই সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেড। গাজীপুরের ভোগড়ায় ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের কারখানাটিতে বছরে ৩০ লাখ স্মার্টফোন বানাবে শাওমি বাংলাদেশ। তবে বর্তমানে দৈনিক আট ঘণ্টার শিফট বা পালায় দুই হাজার স্মার্টফোন তৈরি হচ্ছে। তাতে মাসে উৎপাদন হবে ৫০ হাজার স্মার্টফোন। আগামী জানুয়ারিতে নতুন লাইন চালু হলে স্মার্টফোন উৎপাদন আরও বাড়বে।

শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জানান, ভারত, চীন ও ভিয়েতনামে উৎপাদিত স্মার্টফোনের মতোই একই মানসম্পন্ন স্মার্টফোন বাংলাদেশের কারখানাতেও তৈরি হবে। এ জন্য ধাপে ধাপে এক কোটি মার্কিন ডলার বা ৮৫ কোটি টাকা বিদেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন কারখানায় এক হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে। যদিও বর্তমানে কাজ করছেন ২৬০ জন কর্মী।

বর্তমানে দেশে ডজনখানেক মুঠোফোন সংযোজন কারখানা গড়ে উঠেছে। দেশে প্রথম মুঠোফোন কারখানা করে ওয়ালটন। গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের কারখানার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ২০১৮ সালের মাঝামাঝি। একই বছরের জুনে স্যামসাং ব্র্যান্ডের মুঠোফোন সংযোজন শুরু করে ফেয়ার ইলেকট্রনিকস লিমিটেড। তার তিন মাস পর সিম্ফনি ব্র্যান্ডের মুঠোফোন বাজারজাতকারী এডিসন গ্রুপের কারখানার উদ্বোধন হয়। তারই ধারাবাহিকতায় কারখানা করেছে ভিভো, অপো, রিয়েলমি, টেকনো, আইটেল, ইনফিনিক্স, ফাইভস্টার ও নকিয়া।

সরকারের নীতিসহায়তার কারণেই দেশে একের পর এক মুঠোফোন উৎপাদন বা সংযোজন কারখানা হচ্ছে। বর্তমানে স্মার্টফোন আমদানিতে প্রায় ৫৭ শতাংশ শুল্ক ও কর দিতে হয়। আর যন্ত্রাংশ আমদানি করে সংযোজনে শুল্ক ও কর ১৮ শতাংশের মতো।

রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে শাওমির স্মার্টফোন সংযোজন কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুব্রত রায়, শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শাওমির কারখানার উদ্বোধনে শুভেচ্ছা জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

২০১০ সালে শাওমি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হয়েছে শাওমি। শাওমি কর্পোরেশন ২০১৮ সালের ৯ জুলাই হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত হয়। শাওমি একটি কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং স্মার্টফোনসহ স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি যার মূল হলো স্মার্ট হার্ডওয়্যার এবং ইন্টারনেট অব থিংকস বা আইওটি প্লাটফর্ম। বর্তমানে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে শাওমির পণ্যগুলো ব্যবহার হচ্ছে।

NO COMMENTS

আপনার মতামত প্রদান করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version