মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন রোধ এবং অনলাইনে ডলার কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহমুদুল হাসান নোটিশটি পাঠান। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন রোধ এবং অনলাইনে ডলার কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, এ বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, ইদানিং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ডলারের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। ২০০৬ সালে ১ ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৭০ টাকা। অন্যদিকে, ২০২১ সালের অক্টোবরে ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫.৬০ টাকা এবং ক্ষেত্রবিশেষে ৮৮ টাকা দরে ডলার বিক্রি হচ্ছে।
অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী, সব মুদ্রার মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে। এমনকি মার্কিন ডলারেরও মুদ্রাস্ফীতি আছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাংলাদেশে এই মার্কিন ডলারের দাম অনৈতিক ও অন্যায় বাড়ানো হচ্ছে এবং বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার মান অবমূল্যায়ন হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রার অবমূল্যায়নের দরুন বিদেশ থেকেও অন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানিতে অধিক পরিমাণে অর্থ খরচ হচ্ছে এবং আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য ও জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাপক সমস্যায় জর্জরিত মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়ন রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতার জন্য বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য ও জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ ও দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে নিপতিত হয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স ব্যতীত বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পেওনিয়ার, স্ক্রিল, নেটেলার, পেঁপল, ওয়েবমানি ইত্যাদির মাধ্যমে অধিক মূল্যে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে। বাংলাদেশে এসব বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ৯০ থেকে ১০০ টাকার ডলার বিক্রি হচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংককে অবিলম্বে এসব অনলাইন মানি এক্সচেজ সাইট নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে এবং এসব ওয়েবসাইটে পেওনিয়ার, ভীল, নেটেলার, পেপল, ওয়েবমানি ইত্যাদির ডলারের মূল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্যে করতে হবে। পাশাপাশি এসব অনলাইন ডলারগুলোকে বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত।