গত দুই বছর ভারতের অভ্যান্তরীণ বাজারে চাহিদা ও পেঁয়াজের ক্ষতি হওয়ায় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটি। পেঁয়াজ রপ্তানিতে এ বছরও ভারত নিষেধাজ্ঞা দেবে এমন খবরে দেশে গত দুই সপ্তাহে দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তবে এ বছর দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে না।
নয়াদিল্লীর বাংলাদেশের হাইকমিশন অফিসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ড. একেএম আতিকুল হক সম্প্রতি বাণিজ্য সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এমন তথ্য দিয়েছেন।
চাহিদার ৮০ ভাগ পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন হয়। তবে উৎপাদিত পেঁয়াজের এক-চতুর্থাংশ পচে নষ্ট হওয়ার কারণে প্রতি বছর গড়ে ১০ লাখ টন আমদানি করতে হয়। আমদানি পেঁয়াজের ৯৫ শতাংশই আসে ভারত থেকে।
বিশ্বে পেঁয়াজের বড় রপ্তানিকারক দেশ ভারত। তা সত্বেও প্রতিবছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ভারতেও পণ্যটির উৎপাদন, মজুদ ও বাজারজাতে সাময়িক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে।
দুই উৎপাদন মৌসুমের মধ্যবর্তী এ সময়টাকে ‘লিয়েন পিরিয়ড’ ধরে নিয়ে আগাম সতর্কতা হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের জনগণের অভ্যন্তরীণ চাহিদা অনুযায়ী যোগান সচল ও দাম স্থিতিশীল রাখতে প্রায় বছর হস্তক্ষেপ করে।
দাম নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে ভারত থেকে বিশ্বের যে কোনো দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখা হয়।
তবে কোনো আগাম নোটিশ না দিয়ে ২০১৯ ও ২০২০ সালে (যথাক্রমে ২ ও ১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশটির বাণিজ্য দপ্তর।
এতে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যটির সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। আর এ ঘাটতিকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যটির সরবরাহে কৃত্রিম সংকট তৈরি ও ইচ্ছেমাফিক দাম বড়িয়ে দেয়। যা ভোক্তার ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এতে সরকারকেও চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো কমার্শিয়াল কাউন্সিলরের চিঠিতে বলা হয়, এ বছর পরিস্থিতি ভিন্নরকম। দেশটির পেঁয়াজ উৎপাদনকারী বিভিন্ন রাজ্যে গত ২০১৯-২০ মৌসুমের তুলনায় বিদায়ী ২০২০-২১ মৌসুমে উৎপাদন ২০ লাখ টন বেশি হয়েছে। অর্থাৎ এবার ভারতে পেঁয়াজের বাম্পার স্টক রয়েছে। নেই সরবরাহেও সংকট।