ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য একটি বোর্ড গঠন করে দেবে হাইকোর্ট। এতে থাকবেন একজন সাবেক বিচারপতি, একজন সচিব, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট ও একজন আইনজীবী। ইভ্যালি অবসায়ন চেয়ে করা এক রিটের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন রেখেছে বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার ও প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী তাপস কুমার বল। তিনি বলেন, ‘আজ ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি ছিল। শুনানি শেষে আদালত বলেছে, এ বিষয়ে একটি বোর্ড গঠন করে দেয়া হবে।’
একজন গ্রাহকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর রুল জারি করে হাইকোর্ট। রুলে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ইক্যাব, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন, ইভ্যালিকে বিবাদী করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী সোমবার (১১ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় নথিপত্র হাইকোর্টে জমা দেয় জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ। সবশেষ অডিট রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা থাকলেও ইভ্যালি দেয় ২০১৯ সালের অডিট রিপোর্ট। ১২ অক্টোবরের মধ্যে এসব নথি আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওইদিন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ তলবের আদেশ দিয়েছিলেন। আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব ওইদিন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে গত মে মাসে একটি ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনায় ৩৩ হাজার ৩০৮ টাকার একটি রসিদও দেয়।
কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। পণ্য বুঝে পেতে আবেদনকারী যোগাযোগ করলে তাকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি। পরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকারে কয়েকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং হাইকোর্টে কম্পানিটির অবসায়ন চেয়ে আবেদন করেন। ইভ্যালির বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে না পারার অভিযোগ ছিল অনেক দিন ধরে। এসবের মাঝে গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এরপর গুলশান থানায় করা অর্থ আত্মসাৎ মামলায় তাদেরকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। এই মামলায় রিমান্ড শেষে ধানমন্ডি থানায় করা অর্থ আত্মসাতের অন্য এক মামলায় রাসেলকে ফের রিমান্ডে পাঠানো হয়। আসামি দুজনই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।