জাতিসংঘের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে দেশের বেসরকারি খাতকে যেসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে তা মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। বিশেষ করে দক্ষতা বৃদ্ধিতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কাছে করিগরি সহায়তা চান তিনি। তিনি মনে করেন, এতে এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি এসডিজি অর্জনও সহজ হবে।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে, আয়োজিত ‘নিউ ওয়ার্ল্ড, নিউ হোপ : জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সহায়তায়, জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে আয়োজিত এ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘সেন্টার ফর নন রেসিডেন্স বাংলাদেশীস’।
বক্তৃতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে বাংলাদেশি শরনার্থী ও পরবর্তীতে দেশে ফেরার পর, তাদের পুনর্বাসনে জাতিসংঘের সহায়তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই জাতিসংঘের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে ১৯৭৪ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর, সংস্থাটির ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলায় দেয়া ভাষণের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়। শান্তি মিশনসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রমে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। জাতিসংঘ শান্তি কমিশন ও হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল উভয়েরই প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য বাংলাদেশ।’
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে, বিশেষ করে দারিদ্র দূরীকরণ, টেকসই উন্নয়ন কৌশল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, মাতৃ ও শিশু উন্নয়ন, টিকাদান, যুব উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, শিল্প উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য সেবা ও গবেষণা খাতে জাতিসংঘের অবদানের কথা উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
করোনা মহামারী দেশের অর্থনীতিতে কঠিন আঘাত হেনেছে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক দিক নির্দেশণা ও নীতিকৌশলের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুতই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে আছে। দারিদ্র বিমোচন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুহার কমানো, গড়আয়ু বৃদ্ধি, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি,মাথাপিছু গড় আয় বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, টেকসই প্রবৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক সব সূচকে অগ্রগতি অব্যাহত রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ এসডিজি অর্জন করবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পর, বিশ্ব বাজারে দেশের বেরসরকারি খাত বাড়তি কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এসব চ্যালেঞ্জ জিততে ব্যক্তিখাতের দক্ষতা বৃদ্ধিতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কাছে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন।’
সম্মেলনে অনলাইন মাধ্যমে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিস্টার আর্ল আর মিলার, ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ মিয়া সেপ্পো, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রেখেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের লেফটেন্যান্ট ওয়ালসন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইনক এর নেতা, ও গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বারের সদস্য শেকিল চৌধুরী।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ীক প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছে।