বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সেই সঙ্গে রাষ্ট্র হিসেবে উচ্চ মধ্যম আয়ের মর্যাদায় পৌঁছাতে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চাকাঙ্খার দিকে অগ্রগতি পুনরায় শুরু করার ওপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
ই-মেইলের মাধ্যমে বাসসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইএমএফ বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ বলেন, ‘গত এক দশকে বাংলাদেশের চমকপ্রদ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়ন অর্জন করেছে, দারিদ্র্য হ্রাস এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অনেক সূচকে দৃঢ়ভাবে অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মহামারীর এই দীর্ঘ সময়ের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। তা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের অনুকূল জনসংখ্যা একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ উপস্থাপন করেছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও প্রাণোচ্ছল করে তুলতে সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে এবং রাষ্ট্র হিসেবে উচ্চ মধ্যমআয়ের মর্যাদায় পৌঁছতে সরকারের উচ্চাকাক্সক্ষার দিকে অগ্রগতি পুনরায় শুরু করতে হবে।
এই সংস্কার প্রচেষ্টায় সবার আগে কর-রাজস্ব বৃদ্ধি, এটি দীর্ঘদিনের একটি চ্যালেঞ্জ, যা দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তার জন্য সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন রাহুল আনন্দ।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাটের হার কাঠামো সরলীকরণ এবং বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এর জন্য কর ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং রাজস্ব আদায়ের অগ্রগতির উন্নতি প্রয়োজন। ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান এবং উন্নত করপোরেট শাসন ও আইনি ব্যবস্থা উন্নত করতে আর্থিক খাতের সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিশালী অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা বজায় রাখার জন্য একটি আধুনিক নীতি কাঠামো দ্বারা সমর্থিত উৎপাদনশীল বিনিয়োগও বাড়ানো প্রয়োজন।
সহায়ক আর্থিক ও রাজস্ব নীতির পাশাপাশি টেকসই রপ্তানি বৃদ্ধি কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে উল্লেখ তিনি বলেন, ২০২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্ব পরিস্থিতির উন্নতি এবং অভ্যন্তরীণ টিকাকরণ কর্মসূচি অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগামী ২০২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।