মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অধিকতর অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগদান করবেন। এ উপলক্ষে রবিবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘প্রেস ব্রিফিং’-এ ডিসিসিআই’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমান আয়োজিতব্য বাণিজ্য সম্মেলনের সার্বিক দিক তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘অবকাঠমো (ফিজিক্যাল, লজেস্টিক অ্যান্ড এনার্জি), আইটি বা আইটিইএস এবং ফিনটেক, লেদারগুডস, ফার্মাসিউটিক্যাল, অটোমোটিভ অ্যান্ড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক পণ্য, অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল, এফএমসিজি অ্যান্ড রিটেইল বিজনেস প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও করণীয় সম্পর্কে বাণিজ্য সম্মেলনে আলোকপাত করা হবে। এ বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশে^র ৩৮টি দেশের সর্বমোট ৫৫২টি কোম্পানি সপ্তাহব্যাপী ৪৫০টি বিটুবি’তে অংশগ্রহণ করবে। এর মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’
এছাড়াও ঢাকা চেম্বারের সভাপতি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ ও ইউরোপের অর্থনীতি : নতুন নীতি কাঠামো’, ‘এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তোরণ ও প্রস্তুতি’, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা’,‘এশিয়া-প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ : অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’, ‘বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা : নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা’ এবং ‘বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নে সহায়ক ঋণ প্রক্রিয়া’ শীর্ষক ৬টি ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে।
ওয়েবিনারে সংশ্লিষ্ট খাতের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করবেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘ভার্চুয়াল বাণিজ্য সম্মেলনটি বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের কাছে কোভিড মহামারীকালীন সময়েও ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়সমূহ তুলে ধরা হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, ‘এ আয়োজন পিপিপি মডেলের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত, যা বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও নীতি সহায়তার বিষয়সমূহ তুলে ধরবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে, যার সুবিধা নিয়ে আমাদেরকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণে পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক সুবিধাপ্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হবো। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদেরকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে এবং এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সম্ভাব্য দেশগুলোর সঙ্গে এফটিএ, পিটিএ স্বাক্ষরসহ নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘এ বাণিজ্য সম্মেলন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হবে, যা আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে। আমাদের রপ্তানি খাত বেশিমাত্রায় তৈরি পোশাক নির্ভর, এখন সময় এসেছে অন্য খাতগুলোকে নিয়ে কাজ করা এবং বাণিজ্য সম্মেলনে সম্ভাবনাময় ৯টি খাতের ওপর আলোকপাত করা হবে।’
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আয়োজিতব্য বাণিজ্য সম্মেলনটি সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এর মাধ্যমে ৫টি মহাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক উদ্যোক্তাদেরকে বিটুবি সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে বর্হিবিশে^ বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা হবে, যার মাধ্যমে আরও বেশি হারে বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব হবে।’
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ, সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।