সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। সুইস ফেডারেল কাস্টমস প্রশাসনের পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানা যায়। রোববার (১০ অক্টোবর) শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত সৌজন্য সাক্ষাতের সময় দুই দেশের বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হয়। দেশে চামড়া শিল্পখাতে সুইজারল্যান্ডের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।
সুইজারল্যান্ডের উদ্যোক্তাদের আগ্রহকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এ সময় শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুইস রাষ্ট্রদূত সুইজারল্যান্ডের জুরিখভিত্তিক একটি ট্যানারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের চিঠি মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন এবং নিজে সাভারের ট্যানারি শিল্পনগরী পরিদর্শনের আগ্রহের কথা জানান। শিল্পমন্ত্রী তাকে বলেন, সাভারের ট্যানারি শিল্পনগরীতে কেন্দ্রীয়ভাবে সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (সিইটিপি) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং এ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে তাদের যে কোন ধরনের সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানবিক উন্নয়ন খাতে সুইজারল্যান্ড অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এছাড়া রসায়ন, ওষুধ, অবকাঠামো, কারিগরি সেবা এবং ভোগ্যপণ্য খাতে সুইস বিনিয়োগ উল্লেখ করার মতো। তিনি এসব খাতে সুইস উদ্যোক্তাদের আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎকালে উভয়ে মেধাসম্পদ সুরক্ষায় নতুন নতুন উদ্ভাবনের পেটেন্ট, ডিজাইন, পণ্য ও সেবার ট্রেডমার্কস এবং ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) ইত্যাদি ইস্যুতে একযোগে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত হন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের কী ধরনের সহযোগিতা দরকার, রাষ্ট্রদূত তা জানানোর অনুরোধ জানান। শিল্পমন্ত্রী বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক খাতে আমদানি বৃদ্ধির জন্যও সুইস রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ এক দশকে প্রায় ৩গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। সুইস ফেডারেল কাস্টমস প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে দু’দেশের মধ্যে প্রায় ৮১ কোটি ফ্রাঙ্ক সমমূল্যের পণ্য লেনদেন হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৬৮ কোটি সুইস ফ্রাঙ্ক এবং বাংলাদেশ আমদানি করেছে ১৩ কোটি সুইস ফ্রাঙ্ক মূল্যের পণ্য।