জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে সবাইকে কাজ করতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

0
62

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ তথা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বাণিজ্যসুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১-এর ‘ইকোনমিক টাই অফ বাংলাদেশ অ্যান্ড ইউরোপ: নিউ রেগুলেটরি রিজুম’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য দেন।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। বর্তমানে দেশের ৯৭ ভাগ রপ্তানি পণ্যের ওপর ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন ‘এভরিথিং বাট আর্মস স্কিম’ (ইবিএ)-এর আওতায় জিএসপি সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু উত্তরণের পর বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকে। সে ক্ষেত্রে ইইউয়ের দেয়া বাণিজ্যসুবিধা বহাল রাখার বিষয়ে জোর সংশয় তৈরি হয়েছে।

তবে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১-এর ভার্চুয়াল সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইইউ থেকে বাণিজ্যসুবিধা পেতে কোনো সমস্যা হবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা অব্যাহত রেখেছে সরকার, যাতে বাণিজ্যসুবিধা অব্যাহত রাখতে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয়।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সব বিধি-বিধান মেনেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে এবং সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ইইউসহ দাতা দেশগুলোর চাওয়া অনুযায়ী, বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করেছে। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করেছে। কর্মবান্ধব পরিবেশও সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকরা এখন গ্রিন ফ্যাক্টরিতে কাজ করছে। বিশ্বের সেরা ও সর্বোচ্চ গ্রিন ফ্যাক্টরির তালিকায়ও রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে। এ প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত অব্যাহত রয়েছে, যা বাংলাদেশকে ইইউসহ অন্যান্য দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা পেতে সহায়তা করবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। ইইউ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। এই গ্র্যাজুয়েশনের পরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত ডিউটি ফ্রি বাণিজ্যসুবিধা অব্যাহত রাখতে ইতিমধ্যে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যা বাংলাদেশের উত্তরণ-পরবর্তী বাণিজ্যকে মসৃণ করবে।’

টিপু মুনশি দাবি করেন, অনেক অর্জন হলেও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে অসত্য তথ্য সরবরাহ ও অপপ্রচারের চেষ্টা করা হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তবে এ ক্ষেত্রে বেসরকারি ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।’

দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল এবং বাণিজ্যের প্রকৃত চিত্র দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী সংগঠন এবং চেম্বারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সভায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। ওই বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রুবানা হক, গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ইয়াসিন আজমান, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাছের ইজাজ বিজয়, ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার এবং ইয়ন গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন ইউডি দৌলা।

আপনার মতামত প্রদান করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here