এখন পর্যন্ত ৬৭ লাখ ৯২ হাজার ব্যক্তি ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের ইটিআইএন রেজিস্ট্রেশনের প্রবৃদ্ধি ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরে নিবন্ধন নিয়েছেন রেজিস্ট্রেশন করেছেন ১৩ লাখ মানুষ। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৪ লাখেরও বেশি ব্যক্তি।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এসব কথা জানান।
টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক হলেও রিটার্ন দাখিল সেই অর্থে বাড়েনি- এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টিআইএন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হলেও আমরা এখনও কঠোর হচ্ছি না। আমরা চাই করদাতারা নিজ উদ্যোগে রিটার্ন দাখিল করুক। আমরা ডোর টু ডোর সার্ভে শুরু করেছি। করোনার কারণে যা বন্ধ ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে করোনা পরিস্থিতিতে আয়কর মেলা আয়োজনের পরিবর্তে কর কমিশনার অঞ্চলগুলোতে জাকজমকপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য করদাতাদের সেবাদানের বিষয়টি জানানো হয়।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশব্যাপী ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে আয়কর রিটার্ন গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান, কার পার্কিং এরিয়া প্রভৃতিতে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণের পরিবেশ থাকবে। সেবা কেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা থাকবে।’
এসব কেন্দ্রে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে তার মধ্যে রয়েছে, প্রতিটি কর অঞ্চলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তথ্যসহ হালনাগাদ করতে হবে। ওই ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফর্ম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশ থাকবে। কর অঞ্চলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। অন্য মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।
কর অঞ্চল-৪-এর ব্যবস্থাপনায় সচিবালয়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবের সদস্যদের জন্য অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে নভেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহ কর তথ্য সেবা প্রদান করা হবে। সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের জন্য সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ২ নভেম্বর করদাতাদের রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্য সেবা প্রদান করতে হবে। সব কর অঞ্চলের কমিশনাররা তাদের নিজ নিজ কর অঞ্চলের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আরও রয়েছে, আগামী ২৪ নভেম্বর ২০২১ তারিখে সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী ১৪১ জন করদাতাকে ট্যাক্স কার্ড এবং জেলা বা সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ৫২৫ জনসহ মোট ৬৬৬ জন সেরা করদাতাকে একটি ক্রেস্ট, একটি পরিচিতি কার্ড ও একটি সম্মাননা সনদ প্রদান করা হবে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের ৪টি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা প্রদান করবে।
আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস ২০২১ উদযাপন করা হবে। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলা আয়োজন করে আসছে এনবিআর। এরই মধ্যে কর মেলা সাধারণ করদাতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে গত বছরও করোনা বিবেচনায় নিয়ে মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।