নতুন করে আর কোনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়ন করবে না এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সংস্থাটি সদস্যভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন ফান্ড ঘোষণা করেছিল। এই ফান্ড অনুমোদন করেছে সংস্থাটি।
বুধবার (২০ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া এ খবর জানান।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে, এসব কারণেই মূলত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক নতুন জ্বালানি নীতি অনুমোদন করেছে। মূলত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমানোকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সারাবিশ্বে সবার জন্য কমখরচে জ্বালানি নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে।
এডিবির সভাপতি মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুতের ভূমিকা মুখ্য। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি জলবায়ু ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। এডিবির নতুন জ্বালানি নীতি আমাদের উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে (ডিএমসি) নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ীমূল্যের ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি দিতে সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এডিবি নতুন কোনো কয়লাভিত্ত্বিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আর অর্থায়ন করবে না।
চলতি সময় থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এই ফান্ড সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে এডিবি। জলবায়ু খাতে ২০১৯ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত এ ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে এডিবি।
উন্নয়নশীল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে জ্বালানি শক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। তারপরও এই অঞ্চলের প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন মানুষের কাছে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। এছাড়া ১৫০ মিলিয়ন মানুষের এখনও বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে বঞ্চিত।
ক্রমাগত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নগরায়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসহ সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা প্রতিবছর প্রায় ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। ২০১৯ সালে সালে তিন হাজার ৩৮৬ গিগাওয়াট থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ছয় হাজার ১১৩ গিগাওয়াট হতে পারে। ২০৩০ সালে আগের দশকের তুলনায় জ্বালানি ব্যবহার দ্বিগুণ।
এডিবি জানায়, ২০১৮ সালে এডিবি জলবায়ু খাতে ৭৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছিল। যা পরবর্তী সময়ে বাড়িয়ে ৮০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়। আজকের ঘোষণা অনুযায়ী এই অর্থ বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এডিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।