আগের কার্যদিবসের মতো সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (১৮ অক্টোবর) বড় পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। সোমবারের দিন নিয়ে টানা ছয় কার্যদিবস পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এই ছয় কার্যদিবসে ২৭০ পয়েন্ট সূচক কমেছে। এতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একপ্রকার অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৯.১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৯৭.২৭ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২১.১৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৬.৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৫২৫.১৭ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৬৭৮.৫৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে সোমবার এক হাজার ৩৯৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ২৬১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৬৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার।
ডিএসইতে সোমবার ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৩৩টির বা ৮.৮২ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ৩২৪টির বা ৮৬.৬৩ শতাংশের এবং ১৭টির বা ৪.৬৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৭৩.৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৭৪৮.৬০ পয়েন্টে। সিএসইতে সোমবার ৩০৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৫০টির আর ১২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সোমবার ডিএসই’র ব্লক মার্কেটে ১৮টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৯১০টি শেয়ার ২৮ বার হাত বদলের মাধ্যমে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৬ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে সোনালী পেপারের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ কোটি ৬৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে বিএসআরএম লিমিটেডের।
সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৩টির বা ৮.৮২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে গোল্ডেন সনের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের কার্যদিবস গোল্ডেন সনের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৬.৪০ টাকায়। সোমবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৬০ টাকা বা ৯.৭৫ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে গোল্ডেন সন ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।
এদিন ডিএসইতে টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সাউথবাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ৫.২৩ শতাংশ, বিএসআরএম লিমিটেডের ৪.৪৭ শতাংশ, সোনালী পেপারের ৪.৪৭ শতাংশ, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের ৩.৭৪ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মার ৩.৩৫ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৩.৩০ শতাংশ, শেফার্ডের ৩.২৮ শতাংশ, আরামিটের ২.৫৯ শতাংশ এবং ফারইস্ট নিটিংয়ের শেয়ার দর ১.৯৯ শতাংশ বেড়েছে।
সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩২৪টির বা ৮৬.৬৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে মেঘনা কনডেন্স মিল্কের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের কার্যদিবস মেঘনা কনডেন্স মিল্কের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৮.৫০ টাকায়। সোমবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ১৬.৮০ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৭০ টাকা বা ৯.১৮ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে মেঘনা কনডেন্স মিল্ক ডিএসইর টপটেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।
এদিন ডিএসইতে টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিচ হ্যাচারির ৮.৪৫ শতাংশ, ঢাকা ডাইংয়ের ৭.৯২ শতাংশ, সাভার রিফ্রাক্টরিজের ৭.৯০ শতাংশ, উসমানিয়া গ্লাসের ৭.৫৩ শতাংশ, অলিম্পিক এক্সেসরিজের ৭.৩৭ শতাংশ, বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ৭.২১ শতাংশ, পেপার প্রসেসিংয়ের ৬.৫৭ শতাংশ, আইএলএফএসএলের ৬.৩২ শতাংশ এবং মনোস্পুল পেপারের শেয়ার দর ৫.৯০ শতাংশ কমেছে।