ব্যবসায়িদের সতর্ক করল এফবিসিসিআই

0
91

‘যথেষ্ট মজুদ থাকা সত্ত্বেও কিছু ব্যবসায়ীর কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে দেয়া যাবে না। কয়েকজন ব্যবসায়ীর জন্য সবার বদনাম আমরা সহ্য করবো না। এটা তাদের জন্য ম্যাসেজ। লাভ করেন, তবে সেটা সীমার মধ্যে করেন।’

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এমন সতর্কবার্তা দেন ব্যবসায়ীদের।

রবিবার (১৭ অক্টোবর) ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ে মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সারাদেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারাও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেন। (এফবিসিসিআই) সভাপতি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে এসেছেন। ব্যবসায় তারা মুনাফা করবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে স্বল্প কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে সব ব্যবসায়ীকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। তাই অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে হবে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য আমাদের সবার বদনাম না হয়। এটা তাদের জন্য একটা ম্যাসেজ। এভাবে চলতে দেয়া যাবে না। আমরা ব্যবসা করতে এসেছি কারো গালি শুনতে নয়।’

কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনা-আপনি পেঁয়াজের দাম আকাশ ছোঁয়া হয়নি। দাম বাড়ানোর পেছনে একটি মহল কাজ করেছে। তাদের কারসাজিতেই দাম বেড়েছিল। আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেয়ার পর পরই পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা কমে এসেছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে ১৫ টাকা কমার মানে কী? এর মানে দাঁড়ায়, দাম বাড়ানোর পেছনে কারসাজি ছিল। তারা দাম কমালে, আগেই কমাতে পারতো।’

চালের দাম বাড়তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক কেজি চাল বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। অরাজকতা চলছে। এটা ঠিক নয়। আগে কেজিতে ৫০ পয়সা বা ১ টাকা মুনাফা করতেন ব্যবসায়ীরা। এখন কেজিতে পাঁচ-ছয় টাকাও মুনাফা করছেন কেউ কেউ। কেন এমন হবে?’

অনুষ্ঠানে পাইকার ও আড়তদার ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। তারা জানান, আমদানির একটা বড় অংশ প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আসে। সেখানে সম্প্রতি অতিবৃষ্টি আর বন্যায় পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে।’

তবে শুল্ক কমানোর ঘোষণার একদিনের মাথায় দাম কমা নিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতির প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেননি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা।

এ সময় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘ব্যবসায় লাভ-লোকসানের হিসাব থাকে। তাই বলে সুযোগ পেলেই দাম বাড়াবেন, এটা হতে পারে না। এসব কারণে কতিপয় ব্যবসায়ী কিছু অর্থ পেলেও প্রকৃতপক্ষে আমাদের (ব্যবসায়ী) জন্য খুবই অসম্মানজনক।’

এছাড়া রাজধানীর একেক বাজারে একেক দামের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কারওয়ান বাজারে একটা পণ্যের দাম ১০ টাকা হলে সেটি গুলশানে গিয়ে হয়ে যায় ২০ থেকে ২৫ টাকা, এর কারণ কী?’

এমন প্রশ্নে ব্যবসায়ীরা এফবিসিসিআই সভাপতিকে জানান, এলাকাভেদে দোকান ভাড়া বেশি। গুলশান আর কারওয়ানবাজারের ভাড়ার পার্থক্য অনেক। এলাকা ভেদে দোকান ভাড়া, বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি মূল্য বেশি ও ট্রেড লাইসেন্সের খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেন তারা।

তবে তার জন্য এতো দামের পার্থক্য হবে না বলে মনে করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এ ক্ষেত্রেও কারসাজির আশ্রয় না নিতে আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অসাধু ব্যবসায়ী খুঁজে বের করতে বলেন।

তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দারা রিপোর্ট করে যে, অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। তারা যেহেতু জানে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে, তাহলে তারা তাদের ধরে না কেন? তারা জেনেও তাদের ধরে না, অন্যদিকে আমাদের বদনাম শুনতে হয়।’

আপনার মতামত প্রদান করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here