পর পর চারদিন পতন শেয়ারবাজারে, লেনদেন আড়াই মাসে সর্বনিম্ন

0
69

সপ্তাহের পঞ্চম বা শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবারের দিন নিয়ে টানা চার কার্যদিবস পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন শেয়ারবাজারের সব প্রধান প্রধান সূচক কমেছে। একই সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন আড়াই মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম হয়েছে।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার এক হাজার ৪৩৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে বৃহস্পতিবারের লেনদেন দুই মাস ১৬ দিন বা ৫১ কার্যদিবসের মধ্যে সবচেয়ে কম হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবারের চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৩৬০ কোটি টাকার।
বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫.১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ২৪৩.২৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ০.৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১.৫৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৫৬৭.৪৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৭১৯.১৩ পয়েন্টে।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার ৩৭৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১১৪টির বা ৩০.৩২ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২১৯টির বা ৫৮.২৪ শতাংশের এবং ৪৩টির বা ১১.৪৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৬.৩১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১১৭.৫৬ পয়েন্টে। সিএসইতে বৃহস্পতিবার ২৯৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৭টির আর ৩০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪৬ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসই’র ব্লক মার্কেটে ৩৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৬০ লাখ ৩২ হাজার ৩৪৯টি শেয়ার ৮১ বার হাত বদলের মাধ্যমে ৫০ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ২২ কোটি ৩০ লাখ ৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৪৯ লাখ ১৬ হাজার টাকার বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩ কোটি ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে বিবিএস কেবলসের।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১৪টির বা ৩০.৩২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি।

আগের কার্যদিবস আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৮.৮০ টাকায়। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ২০.৬০ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৮০ টাকা বা ৯.৫৭ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

এদিন ডিএসইতে টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৮.১৬ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের ৭.৪২ শতাংশ, ফরচুন সুজের ৭.২১ শতাংশ, বিডি ল্যাম্পসের ৬.১৫ শতাংশ, এনআরবিসি ব্যাংকের ৬.০৪ শতাংশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৫.৯৮ শতাংশ, লাভেলোর ৫.১১ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকের ৪.৪৩ শতাংশ এবং শাহজিবাজার পাওয়ারের শেয়ার দর ৪.২২ শতাংশ বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২১৯টির বা ৫৮.২৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে এইচআর টেক্সটাইলের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আগের কার্যদিবস এইচআর টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৭৩.৯০ টাকায়। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ৬৮.২০ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৭০ টাকা বা ৭.৭১ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে এইচআর টেক্সটাইল ডিএসইর টপটেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

এদিন ডিএসইতে টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের ৪.৪৫ শতাংশ, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের ৪.১১ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৪.১০ শতাংশ, আরএসআরএম স্টিলের ৩.৭১ শতাংশ, ফাস ফাইন্যান্সের ৩.৫৭ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুডসের ৩.৪১ শতাংশ, নর্দান ইসলামী ইন্সুরেন্সের ৩.৪১ শতাংশ, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ৩.৪০ শতাংশ এবং আমান কটনের শেয়ার দর ৩.৩৫ শতাংশ কমেছে।

আপনার মতামত প্রদান করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here