বিভিন্ন অনিয়োগের অভিযোগ থাকায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মামুন-উর-রশিদকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। তবে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদনের আগ পর্যন্ত তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এ দিকে কাজের পরিবেশ না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) মোহাম্মদ সামসুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। সামসুর রহমান অক্টোবর মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এরইমধ্যে তার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সিএসই। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিএসইসি ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সিএসই সূত্র জানায়, গত বছরের ২২ জানুয়ারি সিএসইতে এমডি পদে মামুন-উর-রশিদের নিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন করে বিএসইসি। পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মামুন-উর-রশিদকে এক মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। সূত্র আরও জানায়, গত ০৪ ফেব্রুয়ারি ক্ষুদ্র ঋণের নামে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) মামুন-উর-রশিদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যা তার পদে থাকার বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ ছাড়াও করোনা মহামারীতে দেশীয় পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) লেনদেনে বড় কোন পরিবর্তন আসেনি। এ জন্য মামুন-উর-রশিদের ব্যর্থতা দেখছে সিএসই পর্ষদ।
অভিযোগ রয়েছে, এমডি পদের প্রভাব খাটিয়ে মামুন-উর-রশিদ এক্সচেঞ্জের তিনটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। এর মধ্যে তার ছেলে এক্সচেঞ্জের গাড়ি ব্যবহার করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটিয়েছেন। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্যভান্ডার তথ্য (সিআইবি) ক্লিয়ারেন্স না থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সিএসই কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, নিয়োগের পর দেড় বছর অতিক্রম করলেও উনি কর্মদক্ষতা দেখাতে পারে নাই। এ ছাড়াও উনার সিবিআই ক্লিয়ারেন্সও নাই। তাই, পর্ষদের পক্ষ থেকে মামুন-উর-রশিদকে ব্যাধতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাকে এক্সচেঞ্জটির এমডি পদ থেকে সরিয়ে দিতে অনুমোদন নিতে বিএসইসির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে সিএসইর পর্ষদ।
উল্লেখ্য, দেশের দ্বিতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ হিসেবে ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করা সিএসই। স্টক এক্সচেঞ্জটির ব্রোকার সংখ্যা ১৪৮টি। ২০১৩ সালে ডিমিউচুয়ালাইজড হয় দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পৃথক হওয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ ও বরখাস্তের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন প্রয়োজন হয়।